অধিনায়ক বিরাট কোহলি – ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছে ভারত। আজকের ম্যাচ নিয়ে তারা অনেক কিছু তারা ভাবতে হচ্ছে। এমনকি দলেও পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ যে আজ জয় পেতে মরিয়া, তা বুঝতে পেরেছে ভারত। এজন্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপও গ্রহণ করছে।
ইংল্যান্ডের কাছে হার শুধুমাত্র কোহলি ব্রিগেডের সেমি-ফাইনালে ওঠার প্রতীক্ষা বাড়ায়নি, সেই সঙ্গে তুলে দিয়েছে একগুচ্ছ প্রশ্নও। বিশ্বকাপের মাঝপথে এসে ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই অস্থির পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে শিরোপার অন্যতম দাবিদার ভারত। জনি বেয়ারস্টো, জ্যাসন রয়রা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন আক্রমণের মুখে পড়লে টিম ইন্ডিয়ার জগদ্বিখ্যাত দুই রিস্ট স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল ও কুলদীপ যাদবের কী দশা হতে পারে। সমালোচনার ঝড় উঠেছে রান তাড়া করার সময় মহেন্দ্র সিং ধোনি ও কেদার যাদবের মন্থর ব্যাটিং নিয়েও। ইংল্যান্ড ম্যাচের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে মঙ্গলবার সেই এজবাস্টনেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভুল সংশোধনের লক্ষ্যে নামছে ভারত। প্রথম একাদশে জোড়া পরিবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের। বাদ পড়তে পারেন কেদার যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহাল। সে জায়গায় দলে আসবেন রবীন্দ্র জাদেজা ও ভুবনেশ্বর কুমার।
বিশ্বকাপে রোববারের আগে পর্যন্ত কোহলিদের ধারাবাহিক সাফল্যে ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়ার একাধিক ফাঁক-ফোকর। ইংল্যান্ডের আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের সামনে দিশেহারা দশা প্রকট হয়ে ওঠেছে। এ প্রেক্ষাপটে শুদ্ধিকরণের প্রথম পদক্ষেপ স্বরূপ বসানো হচ্ছে দলের বোঝা হয়ে দাঁড়ানো কেদার যাদবকে। স্পিনার অলরাউন্ডার হিসেবে দলে এলেও কোনো ভূমিকাতেই নজর কাড়তে পারেননি তিনি। ব্যাট হাতে ছয় ম্যাচে করেছেন ৮০ রান। আর সাকুল্যে বল করেছেন ছয় ওভার, কোনো উইকেট পাননি। ভারত অধিনায়কের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে দুই রিস্ট স্পিনারের ছন্দে না থাকাও। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চাহাল ১০ ওভারে দিয়েছেন ৮৮ রান, কোনো উইকেট পাননি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনও ভারতীয় বোলারের এটাই সবচেয়ে খারাপ বোলিং পারফরম্যান্স। কম যাননি কুলদীপও। ১০ ওভারে ৭২ রান দিয়ে তিনি পেয়েছেন একটি উইকেট।
এজবাস্টনের মতো একদিকে মাত্র ৫৯ মিটার বাউন্ডারি বিশিষ্ট গ্রাউন্ডে এক সঙ্গে দুই রিস্ট স্পিনারকে খেলানোর ভুল হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে ভারত। অগত্যা বিচার বিশ্লেষণের পর চাহালকে বসিয়ে ফিঙ্গার স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজাকে প্রথম একাদশে আনার ভাবনা রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের তামিম ইকবাল, সাকিব আল-হাসান, মুশফিকুর রহীমরা রিস্ট স্পিনারদের মোকাবিলায় দারুণ সিদ্ধহস্ত। তাছাড়া জাদেজা ব্যাট হাতেও ছয়-সাত নম্বরে নেমে চালিয়ে খেলতে পারেন। একই সঙ্গে দলে ফেরানো হচ্ছে ফিট হয়ে ওঠা ভুবনেশ্বর কুমারকে। ইংল্যান্ডের পিচে পেসাররা এবার স্পিনারদের থেকে বেশি কার্যকরী ভূমিকা নিচ্ছেন। তাই তিন পেসার নিয়ে মাঠে নামতে চলেছে ভারত, জশপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ সামি ও ভুবনেশ্বর কুমার।
ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশকে হালকাভাবে নেয়ার উপায় নেই। চলতি বিশ্বকাপে সাকিবদের নাছোড়বান্দা মনোভাব মন জিতে নিয়েছে। যদিও সাত ম্যাচে ভারতের ১১ পয়েন্টের বিপরীতে তাদের সংগ্রহ ৭ পয়েন্ট। শেষ চারে ওঠা নিয়ে কোহলিরা যতটা নিশ্চিন্তে রয়েছেন, ততটাই উদ্বেগে টাইগাররা। আশা জিইয়ে রাখতে হলে লিগের বাকি দুই ম্যাচে মাশরাফি মর্তুজাদের জিততেই হবে। কঠিন পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে সাকিবের অবিশ্বাস্য অলরাউন্ড ফর্ম।
Leave a Reply